১। প্রশিক্ষণ কর্মসূচিঃ
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি। বেকার যুবসমাজকে দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করার লক্ষে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক ট্রেডে প্রশিক্ষণ প্রদান করে থাকে। জেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ আবাসিক ও অনাবাসিক ভিত্তিতে প্রদান করা হয়।
জেলা পর্যায়ে যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পরিচালিত আবাসিক প্রশিক্ষণ কোর্সসমূহঃ
গবাদিপশু, হাঁস-মুরগী পালন, প্রাথমিক চিকিৎসা, মৎস্য চাষ ও কৃষি বিষয়ক প্রশিক্ষণ কোর্সঃ
আবাসিক এ প্রশিক্ষণ কোর্সের মেয়াদ ০৩ মাস। এ প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের জন্য প্রশিক্ষণার্থীকে ১০০.০০ (একশত) টাকা ভর্তি ফি এবং জামানত হিসেবে ১০০.০০ (একশত) টাকা (ফেরৎযোগ্য) জমা দিতে হয়। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীদের প্রত্যেককে মাসিক ১২০০.০০ টাকা প্রশিক্ষণ ভাতা প্রদান করে থাকে। এ কোর্সে ভর্তির জন্য ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি পাশ।
মৎস্য চাষ প্রশিক্ষণ কোর্সঃ
আবাসিক এ প্রশিক্ষণ কোর্সের মেয়াদ ০১ মাস। এ প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের জন্য প্রশিক্ষণার্থীকে ১০০/-(একশত) টাকা ভর্তি ফি দিতে হয়। এ প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীদের প্রত্যেককে মাসিক ১২০০.০০ টাকা প্রশিক্ষণ ভাতা প্রদান করা হয়। এ কোর্সে ভর্তির জন্য ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি পাশ।
দুগ্ধজাত দ্রব্যাদি উৎপাদন, বিপণন ও বাজারজাতকরণ প্রশিক্ষণ কোর্সঃ
আবাসিক এ প্রশিক্ষণ কোর্সের মেয়াদ ০১ মাস। এ প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের জন্য প্রশিক্ষণার্থীকে ১০০/-(একশত) টাকা ভর্তি ফি দিতে হয়। এ প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীদের প্রত্যেককে মাসিক ১২০০.০০ টাকা প্রশিক্ষণ ভাতা প্রদান করা হয়। এ কোর্সে ভর্তির জন্য ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি পাশ।
ছাগল ও ভেড়া পালন এবং গবাদি পশুর প্রাথমিক চিকিৎসা প্রশিক্ষণ কোর্সঃ
আবাসিক এ প্রশিক্ষণ কোর্সের মেয়াদ ০১ মাস। এ প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের জন্য প্রশিক্ষণার্থীকে ১০০/-(একশত) টাকা ভর্তি ফি দিতে হয়। এ প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীদের প্রত্যেককে মাসিক ১২০০.০০ টাকা প্রশিক্ষণ ভাতা প্রদান করা হয়। এ কোর্সে ভর্তির জন্য ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি পাশ।
মহিষ পালন ও গবাদি পশুর প্রাথমিক চিকিৎসা প্রশিক্ষণ কোর্সঃ
আবাসিক এ প্রশিক্ষণ কোর্সের মেয়াদ ০১ মাস। এ প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের জন্য প্রশিক্ষণার্থীকে ১০০/-(একশত) টাকা ভর্তি ফি দিতে হয়। এ প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীদের প্রত্যেককে মাসিক ১২০০.০০ টাকা প্রশিক্ষণ ভাতা প্রদান করা হয়। এ কোর্সে ভর্তির জন্য ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি পাশ।
মুরগী পালন ব্যবস্থাপনা, মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিপণন প্রশিক্ষণ কোর্সঃ
আবাসিক এ প্রশিক্ষণ কোর্সের মেয়াদ ০১ মাস। এ প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের জন্য প্রশিক্ষণার্থীকে ১০০/-(একশত) টাকা ভর্তি ফি দিতে হয়। এ প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীদের প্রত্যেককে মাসিক ১২০০.০০ টাকা প্রশিক্ষণ ভাতা প্রদান করা হয়। এ কোর্সে ভর্তির জন্য ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি পাশ।
মুরগী পালন ব্যবস্থাপনা ও বাজারজাতকরণ প্রশিক্ষণ কোর্সঃ
আবাসিক এ প্রশিক্ষণ কোর্সের মেয়াদ ০১ মাস। এ প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের জন্য প্রশিক্ষণার্থীকে ১০০/-(একশত) টাকা ভর্তি ফি দিতে হয়। এ প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীদের প্রত্যেককে মাসিক ১২০০.০০ টাকা প্রশিক্ষণ ভাতা প্রদান করা হয়। এ কোর্সে ভর্তির জন্য ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি পাশ।
মোবাইল সার্ভিসিং এ- রিপেয়ারিং প্রশিক্ষণ কোর্সঃ
আবাসিক এ প্রশিক্ষণ কোর্সের মেয়াদ ০১ মাস। এ প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের জন্য প্রশিক্ষণার্থীকে ১০০/-(একশত) টাকা ভর্তি ফি দিতে হয়। এ প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীদের প্রত্যেককে মাসিক ১২০০.০০ টাকা প্রশিক্ষণ ভাতা প্রদান করা হয়। এ কোর্সে ভর্তির জন্য ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি পাশ।
সংক্ষিপ্ত হাউজকিপিং প্রশিক্ষণ কোর্সঃ
আবাসিক এ প্রশিক্ষণ কোর্সের মেয়াদ ০১ মাস। এ কোর্সে ভর্তির জন্য ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি পাশ। পি পি পি এর মাধ্যমে যৌথ উদ্যোগে এ কোর্সটি পরিচালিত হয়।
জেলা পর্যায়ে পরিচালিত অনাবাসিক প্রশিক্ষণ কোর্সসমূহঃ
পোশাক তৈরী প্রশিক্ষণ কোর্সঃ
অনাবাসিক এ প্রশিক্ষণ কোর্সের মেয়াদ ০৩/০৬ মাস। এ প্রশিক্ষণ কোর্সে ভর্তির জন্য প্রশিক্ষণার্থীকে ৫০/-(পঞ্চাশ) টাকা ভর্তি ফি দিতে হয়। এ কোর্সে ভর্তির জন্য ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি পাশ।
ব্লক প্রিন্টিং প্রশিক্ষণ কোর্সঃ
অনাবাসিক এ প্রশিক্ষণ কোর্সের মেয়াদ ০৬ সপ্তাহ। এ প্রশিক্ষণ কোর্সে ভর্তির জন্য প্রশিক্ষণার্থীকে ৫০/-(পঞ্চাশ) টাকা ভর্তি ফি দিতে হয়। এ কোর্সে ভর্তির জন্য ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি পাশ।
ব্লক, বাটিক ও স্ক্রিন প্রিন্টিং প্রশিক্ষণ কোর্সঃ
অনাবাসিক এ প্রশিক্ষণ কোর্সের মেয়াদ ০৪ মাস। এ প্রশিক্ষণ কোর্সে ভর্তির জন্য প্রশিক্ষণার্থীকে ৫০/-(পঞ্চাশ) টাকা ভর্তি ফি দিতে হয়। এ কোর্সে ভর্তির জন্য ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি পাশ।
মডার্ণ অফিস ম্যানেজমেন্ট এ- কম্পিউটার এ্যাপিস্নকেশনস প্রশিক্ষণ কোর্সঃ
অনাবাসিক এ প্রশিক্ষণ কোর্সের মেয়াদ ৬ মাস। এ প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের জন্য প্রশিক্ষণার্থীকে ৫০০/-(পাঁচশত) টাকা ভর্তি ফি দিতে হয়। এ কোর্সে ভর্তির জন্য ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচ. এস. সি. পাশ।
মৎস্য চাষ প্রশিক্ষণ কোর্সঃ
অনাবাসিক এ প্রশিক্ষণ কোর্সের মেয়াদ ১ মাস। এ প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের জন্য প্রশিক্ষণার্থীকে ৫০/-(পঞ্চাশ) টাকা ভর্তি ফি দিতে হয়। এ কোর্সে ভর্তির জন্য ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি পাশ।
ফ্রিল্যান্স/আউট সোর্সিং প্রশিক্ষণ কোর্সঃ
অনাবাসিক এ প্রশিক্ষণ কোর্সের মেয়াদ ০২ মাস। এ প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের জন্য প্রশিক্ষণার্থীকে ৩০০০/-(তিন হাজার) টাকা ভর্তি ফি দিতে হয়। এ কোর্সে ভর্তির জন্য ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচ. এস. সি. পাশ।
উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন বিষয়ে ভ্রাম্যমাণ প্রশিক্ষণ কোর্সসমূহঃ
ভ্রাম্যমাণ প্রশিক্ষণ কোর্সসমূহের মেয়াদ ৭ দিন থেকে ২১ দিন। এটি অনাবাসিক প্রশিক্ষণ এবং এ প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের জন্য কোন ফি দিতে হয় না। ইউনিট থানা ও উপজেলা পর্যায়ে স্থানীয় চাহিদার ভিত্তিতে এ প্রশিক্ষণ কোর্স পরিচালনা করা হয়ে থাকে।
২। দারিদ্র্য বিমোচন ও ঋণ কর্মসূচিঃ
সম্পদের সীমাবদ্ধতার কারণে বেকার যুবরা দারিদ্রে্যর মধ্যে বসবাস করে। তাদের নিজস্ব কোন সম্পদ ও কর্মসংস্থান না থাকায় তাদের পক্ষে খাদ্য, পুষ্টি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মত মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ করা সম্ভব হয় না। দক্ষতাবৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ ও সহজ শর্তে ঋণ প্রদানের মাধ্যমে এহেন মানবেতর অবস্থা নিরসন এবং বেকার যুবদের জন্যে একটি সুখকর জীবনের ব্যবস্থা করা দারিদ্র্য বিমোচন ও ঋণ কর্মসূচির মূখ্য উদ্দেশ্য। বাংলাদেশের সকল উপজেলাতেই এ কার্যক্রম অব্যাহত আছে।
ক) পরিবারভিত্তিক কর্মসংস্থান কর্মসূচিঃ
পরিবারভিত্তিক ঋণ কার্যক্রমের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো পরিবারিক বন্ধনকে সুদৃঢ় করে বেকার দরিদ্র জনগোষ্ঠির আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য দক্ষতাবৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ ও ঋণ প্রদানের মাধ্যমে স্ব-কর্মসংস্থান সৃষ্টি । দেশের মোট ২৫৮টি উপজেলায় ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি বাসত্মবায়নের অনুমোদন থাকলেও জনবলের অভাবে ২৩৬টি উপজেলায় এ কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে। এ কর্মসূচির আওতায় পরিবারের ঐতিহ্যগত পেশাকে কাজে লাগিয়ে বেকারত্ব নিরসন ও পারিবারিক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য সমুন্নত রেখে কার্যক্রম সম্প্রসারণ, জীবনযাপনের মান ধাপে ধাপে উন্নয়নকল্পে পরিবারে সঞ্চয় অভ্যাস গড়ে তোলা এবং নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য-পরিচর্যা, পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা এবং পরিবেশ উন্নয়নে জনগোষ্ঠিকে উদ্বুদ্ধ করা হয়। পরিবারভিত্তিক ঋণ কার্যক্রমের আওতায় একই পরিবারের অথবা নিকট আত্মীয় বা প্রতিবেশী পরিবারের পরস্পরের প্রতি আস্থাভাজনদের নিয়ে ৫ সদস্যের গ্রম্নপ গঠন করা হয়। একই গ্রামের স্থায়ী নিবাসী এরূপ ৮ থেকে ১০টি গ্রুপ নিয়ে একটি কেন্দ্র গঠিত হয়। কেন্দ্রের প্রত্যেক সদস্যকে ১ম, ২য়, ৩য়, দফায় যথাক্রমে সর্বোচ্চ ১০০০০/-, ১৫০০০/- ও ২০০০০/- টাকা হারে ঋণ প্রদান করা হয়। এছাড়া ৩য় দফা পর্যন্ত সফল ঋণ পরিশোধকারীর আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিবেচনা করে একটি কেন্দ্র হতে সর্বোচ্চ ০৫ জনকে আত্মকর্ম ঋণের নীতি পদ্ধতি অনুসরণ করে এন্টারপ্রাইজ ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা রয়েছে। অধিদপ্তরের কর্মচারীগণ গ্রাম পর্যায়ে ঋণ বিতরণ এবং কেন্দ্র থেকে ঋণের কিস্তি সংগ্রহ করে। গ্রেস পিরিয়ড অর্থাৎ ঋণ পরিশোধের প্রস্ত্ততি সময় অতিক্রম করার পর সাপ্তাহিক কিস্তিতে ঋণের অর্থ আদায় করা হয়। কোন উপকারভোগীকে ঋণ গ্রহণ ও কিস্তি পরিশোধের জন্য অফিসে আসার প্রয়োজন হয় না। মূলধন পাওনার উপর ১০% (ক্রমহ্রাসমান) হারে সার্ভিস চার্জ আদায় করা হয়। এখানে সাপ্তাহিক কিস্তিতে পরিশোধিত আসলের উপর পরবর্তীতে আর কোন সার্ভিস চার্জ আদায় করা হয় না বিধায় মেয়াদ শেষে গড় সার্ভিস চার্জের হার প্রকৃত হিসেবে ৫% দাঁড়ায়। তবে মনে রাখা প্রয়োজন যাঁরা সময়মত সাপ্তাহিক কিস্তি পরিশোধ করেন তারাই সার্ভিস চার্জের ক্ষেত্রে বর্ণিত ৫% এর সুযোগ পেয়ে থাকেন। এ ঋণ প্রাপ্তির জন্যে কোন প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয় না। তবে মনোনীত সদস্যদের ৫দিনব্যাপী আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও ঋণ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির উপর গ্রাম পর্যায়ে কেন্দ্রভিত্তিক ওরিয়েন্টেশনের ব্যবস্থা করা হয়। পরিবারভিত্তিক ঋণ কার্যক্রমের ক্রমপুঞ্জিত ঋণ আদায়ের হার ৯৭%।
খ) যুব প্রশিক্ষণ ও আত্মকর্মসংস্থান কর্মসূচিঃ
এ কর্মসূচির আওতায় দেশের ৬৪টি জেলা ও ৪৯৬টি উপজেলায় (১০টি মেট্রোপলিটন ইউনিট থানাসহ) কার্যক্রম রয়েছে। এ কর্মসূচির আওতায় জেলা সদরে উপ-পরিচালকের কার্যালয়ে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবস্থা রয়েছে। এসব প্রশিক্ষণ কোর্সের মেয়াদ ১ মাস হতে ৬ মাস পর্যন্ত। এছাড়া স্থানীয় চাহিদার ভিত্তিতে বিভিন্ন ট্রেডে স্বল্পমেয়াদি প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য ৪৯৬টি উপজেলায় স্বল্প মেয়াদি অপ্রাতিষ্ঠানিক ভ্রাম্যমাণ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। দেশব্যাপি পরিচালিত যুবদের আত্মকর্মসংস্থান ও আয় সঞ্চারণমূলক কর্মকা- বেকার সমস্যা সমাধান এবং দারিদ্র্য বিমোচনে উলেস্নখযোগ্য অবদান রাখছে। এ কর্মসূচির আওতায় প্রশিক্ষিত বেকার যুবদেরকে আত্মকর্মসংস্থানের লক্ষ্যে প্রাতিষ্ঠানিক/ অপ্রাতিষ্ঠানিক ট্রেডে একক (ব্যক্তিকে) ঋণ প্রদান করা হয়। প্রাতিষ্ঠানিক ট্রেডে একজন প্রশিক্ষিত যুবক/যুবমহিলাকে ৫০,০০০/- থেকে ১,০০,০০০/- টাকা পর্যন্ত এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক ট্রেডে ৩০,০০০/- থেকে ৫০,০০০/- টাকা পর্যন্ত ঋণ প্রদান করা হয়। জেলা ও উপজেলায় দুটি কমিটির মাধ্যমে যথাক্রমে প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক ঋণ অনুমোদন করা হয়। ঋণ প্রাপ্তির জন্য একজন ঋণ গ্রহিতাকে ২ জন জামিনদার নিশ্চিত করতে হয় এবং প্রাতিষ্ঠানিক/ অপ্রাতিষ্ঠানিক ট্রেডে প্রশিক্ষণ গ্রহণ বাধ্যতামূলক। গ্রেস পিরিয়ড অর্থাৎ ঋণ পরিশোধের প্রস্ত্ততি সময় অতিক্রম করার পর বিভিন্ন ট্রেডের জন্য নির্ধারিত মেয়াদে মাসিক কিস্তিতে ঋণের অর্থ আদায় করা হয়। মঞ্জুরকৃত ঋণ পাওনার উপর ১০% (ক্রমহ্রাসমান) হারে সার্ভিস চার্জ আদায় করা হয়। এখানে মাসিক কিস্তিতে পরিশোধিত আসলের উপর পরবর্তীতে আর কোন সার্ভিস চার্জ আদায় করা হয় না বিধায় মেয়াদ শেষে গড় সার্ভিস চার্জের হার প্রকৃত হিসেবে ৫% দাঁড়ায়। তবে মনে রাখা প্রয়োজন যাঁরা সময়মত মাসিক কিস্তি পরিশোধ করেন তারাই সার্ভিস চার্জের ক্ষেত্রে বর্ণিত ৫% এর সুযোগ পেয়ে থাকেন। এ কর্মসূচির ক্রমপুঞ্জিত ঋণ আদায়ের হার ৯৩%।
০৩। বেকার যুবদের কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রকল্প (২য় পর্ব )- এর মাধ্যমে বাস্তবায়িত কর্মসূচিঃ
দেশের শিক্ষিত বেকার যুবদের কারিগরি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করা এবং স্বাবলমবী করে গড়ে তোলাই সমাপ্ত এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। এ প্রকল্পের আওতায় (ক) কম্পিউটার ট্রেডে ইন্টারনেট ও নেটওয়ার্কিংসহ কম্পিউটার বেসিক কোর্স এবং কম্পিউটার গ্রাফিক্স কোর্স (খ) ইলেকট্রিক্যাল এ- হাউজ ওয়্যারিং (গ) রেফ্রিজারেশন এন্ড এয়ার-কন্ডিশনিং এবং (ঘ) ইলেকট্রনিক্স ট্রেডে বেকার যুবদের হাতে কলমে বাস্তবভিত্তিক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। এ সমাপ্ত প্রকল্পের আওতায় দেশে-বিদেশে চাহিদাপূর্ণ এবং যুগোপযোগী ট্রেডে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে বেকার যুবরা কর্মসংস্থান ও আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হচ্ছে। উপরোক্ত ট্রেডসমূহের মধ্যে কম্পিউটার ট্রেডে দেশের সকল জেলায়, ইলেকট্রিক্যাল এন্ড হাউজ ওয়্যারিং ট্রেডে দেশের ২৩টি জেলায়, রেফ্রিজারেশন এন্ড এয়ার-কন্ডিশনিং ও ইলেকট্রনিক্স ট্রেডের প্রতিটিতে দেশের ০৯টি জেলায় প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। তবে এ প্রকল্প ও সমাপ্ত অবশিষ্ট কারিগরি প্রকল্পের মাধ্যমে সকল জেলায় উপ-পরিচালকের কার্যালয়ে উক্ত ট্রেডসমূহে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রশিক্ষণ কোর্সসমূহের মেয়াদ ৬ মাস। প্রতি বছর প্রতি জেলায় ২টি কোর্সে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। কম্পিউটার বেসিক কোর্সে প্রতি ব্যাচে ৪০ জন, কম্পিউটার গ্রাফিক্স কোর্সে প্রতি ব্যাচে ৩০ জন, ইলেকট্রিক্যাল এ- হাউজ ওয়্যারিং কোর্সে প্রতি ব্যাচে ৩০ জন, ইলেক্ট্রনিক্স কোর্সে প্রতি ব্যাচে ৩০ জন এবং রেফ্রিজারেশন এন্ড এয়ার-কন্ডিশনিং কোর্সে প্রতি ব্যাচে ৩০ জনকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এ প্রকল্পের মেয়াদ জুন, ২০০৬ এ সমাপ্ত হয়েছে। প্রকল্পের কার্যক্রমসহ জনবল রাজস্বখাতে স্থানামত্মর প্রক্রিয়াধীন আছে। বর্তমানে থোক বরাদ্দের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বাসত্মবায়ন করা হচ্ছে।
বেকার যুবদের কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রকল্প (২য় পর্ব )- এর মাধ্যমে বাস্তবায়িত প্রশিক্ষণ কোর্সসমূহঃ
কম্পিউটার গ্রাফিক্স কোর্সঃ
অনাবাসিক এ প্রশিক্ষণ কোর্সের মেয়াদ ৬ মাস। এ কোর্সে প্রশিক্ষণের জন্য প্রত্যেক প্রশিক্ষণার্থীকে ২০০০/- টাকা কোর্স ফি প্রদান করতে হয়। এ কোর্সে ভর্তির জন্য ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচ,এস,সি পাশ এবং কম্পিউটার বেসিক কোর্সে প্রশিক্ষণ থাকতে হবে।
কম্পিউটার বেসিক কোর্সঃ
অনাবাসিক এ প্রশিক্ষণ কোর্সের মেয়াদ ৬ মাস। এ কোর্সে প্রশিক্ষণের জন্য প্রত্যেক প্রশিক্ষণার্থীকে ১০০০/- টাকা কোর্স ফি প্রদান করতে হয়। কম্পিউটার বেসিক কোর্সে ভর্তির জন্য ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচ,এস,সি পাশ।
ইলেকট্রনিক্স প্রশিক্ষণ কোর্সঃ
অনাবাসিক এ প্রশিক্ষণ কোর্সের মেয়াদ ৬ মাস। এ কোর্সে প্রশিক্ষণের জন্য প্রত্যেক প্রশিক্ষণার্থীকে ৩০০/- টাকা কোর্স ফি প্রদান করতে হয়। ইলেকট্রনিক্স কোর্সে ভর্তির জন্য ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা এস,এস,সি পাশ।
ইলেকট্রিক্যাল এন্ড হাউজওয়্যারিং কোর্সঃ
অনাবাসিক এ প্রশিক্ষণ কোর্সের মেয়াদ ৬ মাস। এ কোর্সে প্রশিক্ষণের জন্য প্রত্যেক প্রশিক্ষণার্থীকে ৩০০/- টাকা কোর্স ফি প্রদান করতে হয়। ইলেকট্রিক্যাল এ- হাউজ ওয়্যারিং কোর্সে ভর্তির জন্য ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি পাশ।
রেফ্রিজারেশন এন্ড এয়ারকন্ডিশনিং কোর্সঃ
অনাবাসিক এ প্রশিক্ষণ কোর্সের মেয়াদ ৬ মাস। এ কোর্সে প্রশিক্ষণের জন্য প্রত্যেক প্রশিক্ষণার্থীকে ৩০০/- টাকা কোর্স ফি প্রদান করতে হয়। রেফ্রিজারেশন এন্ড এয়ার-কন্ডিশনিং প্রশিক্ষণ কোর্সে ভর্তির জন্য ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা এস,এস,সি পাশ।
০৪। যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পের মাধ্যমে বাস্তবায়িত কর্মসূচিঃ
বেকার যুবক ও যুবমহিলাদের গবাদিপশু, হাঁস-মুরগী পালন, মৎস্যচাষ ও কৃষি বিষয়ে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের কলাকৌশল সম্পর্কিত ০২ মাস ১৫ দিন মেয়াদি আবাসিক প্রশিক্ষণ প্রদান এবং তাদেরকে আত্মকর্মসংস্থানে নিয়োজিত করাই এ সমাপ্ত প্রকল্প ও রাজস্ব কর্মসূচির উদ্দেশ্য । যুবদেরকে প্রশিক্ষণের পাশাপাশি প্রকল্পের সম্পদ সংরক্ষণের জন্য প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কেও জ্ঞানদান করা হয়। প্রতি ব্যাচে ৬০ জন বেকার যুবক ও যুবমহিলাকে আবাসিক প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। আবাসিক যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সংখ্যা মোট ৫৩টি। দেশের সকল জেলায় একটি করে আবাসিক যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের লক্ষে অপর একটি প্রকল্পের মাধ্যমে অবশিষ্ট ১১টি জেলায় ১১টি আবাসিক যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ বাস্তবায়িত হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৪টির নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে এবং ৫টি নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। বিদ্যমান ৫৩টি যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মধ্যে ২১টি ইতোমধ্যে রাজস্ব খাতে স্থানামত্মরিত হয়েছে । অবশিষ্ট ৩২টি কেন্দ্র ‘‘ছাবিবশটি নতুন যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন’’ শীর্ষক প্রকল্প এবং "১৮টি নতুন যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন (১ম পর্যায়-০৮টি কেন্দ্র)" শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় স্থাপন করা হয়েছে। আবাসিক যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসমূহ সর্বনিমণ ১.৫০ একর হতে ৭.০০ একর ভূমির উপর জেলা সদরে স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি আবাসিক যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে অফিস কাম একাডেমিক ভবন, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বাসস্থান, ছাত্রাবাস, ছাত্রীনিবাস, ডাক কাম পোল্ট্রি শেড, কাউ শেড, মৎস্য হ্যাচারী, পুকুর, নার্সারি ইউনিট এবং খেলার মাঠ রয়েছে। যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসমূহ দেশে মৎস্য ও পোল্ট্রি শিল্পের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। ‘‘ছাবিবশটি নতুন যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন’’ শীর্ষক প্রকল্পের মেয়াদ জুন, ২০০৬ এবং "১৮টি নতুন যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন (১ম পর্যায়-০৮টি কেন্দ্র)’’ শীর্ষক প্রকল্পের মেয়াদ জুন, ২০০৭ এ সমাপ্ত হয়েছে। প্রকল্প দু’টির কার্যক্রমসহ জনবল রাজস্বখাতে স্থানামত্মর প্রক্রিয়াধীন আছে। বর্তমানে থোক বরাদ্দের মাধ্যমে সমাপ্ত প্রকল্প দুটির প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রকল্পভুক্ত যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসমূহের মাধ্যমে রাজস্বখাতভুক্ত যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অনুরূপ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বাসত্মবায়ন করা হচ্ছে। সকল যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মাধ্যমে জুন, ২০১৬ পর্যন্ত মোট ৩,০০,৪১৪ জন বেকার যুবক ও যুবমহিলাকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোতে গতি সঞ্চার করে পূর্ণমাত্রায় কাজে লাগানো গেলে যুব প্রশিক্ষণ ও উন্নয়নে এ কেন্দ্রগুলো রোল মডেলে পরিণত হতে পারে।